ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার যোগ্যতা

ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার যোগ্যতা

ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার যোগ্যতা

Table of Contents

‘ডিপ্লোমা ইন ইন্জিনিয়ারিং’ কী?

ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং হল ভারতে ব্যবহারিক এবং দক্ষতা-ভিত্তিক প্রশিক্ষণের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ একটি প্রোগ্রাম। এটি একটি প্রযুক্তিগত কোর্স যা শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় বিষয়গুলিকে কভার করে যখন স্নাতক ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রির সাথে স্থান দেওয়া হয় । এর লক্ষ্য শিক্ষার্থীদের শিল্প বা চাকরি সম্পর্কিত প্রাথমিক প্রকৌশল জ্ঞান, বৈজ্ঞানিক দক্ষতা, কম্পিউটিং এবং বিশ্লেষণ, গাণিতিক কৌশল, ক্ষেত্রে যোগাযোগ করার জন্য ইংরেজির একটি ভালো জ্ঞান এবং সমস্যা সমাধানের কৌশল প্রয়োগ করার ক্ষমতা প্রদান করা।

আরও দেখুন: বিগত সালের সরকারি চাকরির প্রশ্ন উত্তরসহ

এর মেয়াদ ন্যূনতম তিন বছর। ভারত এটিকে প্রি-ইঞ্জিনিয়ারিং বা ব্রিজিং কোর্সের সমতুল্য হিসাবে স্বীকৃতি দেয় যখন ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পর্কিত স্নাতক বা সহযোগী ডিগ্রি প্রোগ্রামগুলিতে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য বিবেচনা করা হয়। ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে ডিপ্লোমা সফলভাবে সমাপ্ত করার পরে, শিক্ষার্থীরা হয় স্নাতক স্তরে আরও প্রকৌশল অধ্যয়ন চালিয়ে যেতে পারে বা টেকনিশিয়ান, প্রযুক্তিবিদ, সুপারভাইজার, সুপারিনটেনডেন্ট, ফোরম্যান, মেশিনিস্ট, ওয়ার্কশপ টেকনিশিয়ান, ড্রাফ্টসম্যান, স্টেশন টেকনিশিয়ান (শক্তি, থার্মাল, অ্যারোনটিক্যাল) হিসাবে চাকরি পেতে পারে। অটোমোবাইল টেকনিশিয়ান, রক্ষণাবেক্ষণ এবং পরিষেবা প্রযুক্তিবিদ, সরঞ্জাম মেকানিক্স এবং টেকনিশিয়ান, CAD/CAM প্রোগ্রামার, কৃষি পর্যবেক্ষক, যন্ত্র প্রযুক্তিবিদ, জুনিয়র প্রশিক্ষক, উত্পাদন, টুল এবং ডাই ডিজাইনার।

ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার যোগ্যতা

ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং হলো ৪ বছর মেয়াদী একটা ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স ।বাংলাদেশে প্রতিটা পলিটেকনিকে ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং  কোর্স করানো হয়। এখানে ৪ বছরে মোট ৮ টি সেমিস্টার।প্রতিটা সেমিস্টার ৬ মাসের হয়ে থাকে।ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং এ বিভিন্ন সাবজেক্ট আছে,যেমন:সিভিল, ইলেকট্রিক্যাল, মেকানিক্যাল,ইলেকট্রনিকস,কম্পিউটার ইত্যাদি।

এসএসসি পরীক্ষার পর ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং এ ভর্তি হতে হয়।এসএসসি রেজাল্টের ওপরে ভিত্তি করে এই ভর্তি নেয়া হয়।ছেলেদের ক্ষেত্রে নূন্যতম জিপিএ ৩.৫০ আর মেয়েদের ক্ষেত্রে ৩.০০ হলে আবেদন করা যায়।তবে গণিতে ৩.০০ এর ওপরে থাকতে হবে।

এইচএসসি সাইন্স থেকেও পাস করার পরেও ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং ৩য় সেমিস্টারে সরাসরি ভর্তি হওয়া যায়।আর এইচএসসি ভোকেশনাল হলে সরাসরি ৪র্থ সেমিস্টারে ভর্তি হওয়া যায়।

ডিপ্লোমা ইন্জিনিয়ারিং-এর সেরা বিষয় কোনটি?

ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং এর সেরা বিষয় বলতে-

যেমনঃ ১।ঐ সাবজেক্ট দিয়ে চাকরি পাওয়া

২।ঐ সাবজেক্ট দিয়ে উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণ করা।

আমি প্রথমে ১ নম্বর আলোচনা করছিঃ

বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং এ সরকারী জব পাওয়ার জন্য সেরা বিষয় ইলেকট্রিক্যাল, সিভিল,মেকানিক্যাল ও পাওয়ার।তবে কম্পিউটার ডিপার্টমেন্টেও সার্কুলার লক্ষ্য করা যায়।

ইলেকট্রিক্যাল ডিপার্টমেন্টে পাওয়ার সেক্টরে ভালো ভালো জব আছে।

যেমনঃ পিজিসিবি,ডিপিডিসি,ডেসকো,আরইবি,নর্থওয়েস্ট সহ সকল পাওয়ার সেক্টর।

সিভিল এর জন্য বছরে সর্বোচ্চ সার্কুলার পাওয়া যায় অন্যান্য ডিপার্টমেন্ট এর তুলনায়।যার ম্যাক্সিমাম ১০ম গ্রেডের জব।বিশেষ করে এলজিইডি,ডিফারেন্ট মিনিস্ট্রি , পানি উন্নয়ন বোর্ড অন্যান্য।

আরও দেখুন: বিগত সালের সরকারি চাকরির প্রশ্ন উত্তরসহ

মেকানিক্যাল ও পাওয়ার ডিপার্টমেন্ট এর জন্য পাওয়ার সেক্টর ও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ১০ম গ্রেডের জবসমূহ পাওয়া যায়।বিশেষ করে পিজিসিবি,ডিপিডিসি,আরইবি,পানি উন্নয়নবোর্ড,বাংলাদেশ ব্যাংক,আরপিসিএল,নর্থ ওয়েস্ট,বি আর পাওয়ার, ইজিসিবি,বাংলাদেশগ্যাস ফিল্ড,সিটি কর্পোরেশন,ওয়াসা,বিটিসিএল রূপপুর পারমানবিক ইত্যাদি।

২।উচ্চতর শিক্ষাগ্রহনের জন্য একমাত্র ডুয়েটই রয়েছে। যাতে সিভিল,মেকানিক্যাল,ইলেকট্রিক্যাল,কম্পিউটার ডিপার্টমেন্ট এর জন্য ১২০ সিট করে রয়েছে।

ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার হয়েও পাওয়ার সেক্টরে ভালো স্যালারি পাওয়া যায় । যেমনঃবেসিক স্যালারী ৩৯০০০ হয়ে থাকে।১০ম গ্রেডে (১৬০০০-৩৮০০০)হয়ে থাকে।

ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য ভালো বিশ্ববিদ্যালয় কোনটি?

ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং  পাশ করে যারা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে CE, EEE & CSE তে বিএসসি করার কথা ভাবছেন! তাদের জন্য প্রথমেই বলব, যদি আপনার পরিবারে আর্থিক কোন সমস্যাই না থাকে, তাহলে কোন কিছু চিন্তা না করে IEB ACCREDITED top ranked ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হয়ে যান। আর পাশাপাশি সরকারি চাকুরি অথবা নিজেকে দক্ষ করে তুলতে পারলে কখনো বেকারত্বের হতাশায় পড়তে হবে না ৷ নিজেকে দক্ষ করে তুলতে পারলে ডুয়েট ছাড়াও ভাল কিছু করা অসম্ভব কিছু নয়৷

  • Top Ranked কিছু ইউনির্ভাসিটি যারা ডিপ্লোমাদের ভর্তি নেয়-
  1. Asia pacific
  2. Stamford
  3. IUBAT
  4. Daffodil
  • আর যাদের আর্থিক অবস্থা মোটামুটি ভাল, চাকরি না করে বি এস সি টা শেষ করা সম্ভব, তারা কম খরচের মধ্যে যেগুলা IEB accredited সেগুলাতে ভর্তি হতে পারেন৷ এখন কম খরচের মধ্যে ইইই(EEE) অথবা সি এস ই(CSE) তে IEB accredited ইউনির্ভাসিটি হচ্ছে-
  1. Green University
  2. Eastern University
  3. IIUC (Chittagong)
  • আর যাদের চাকরি করতেই হবে, তাদের জন্য evening-
  1. Southeast
  2. World University
  3. Green
  4. Eastern
  5. BUBT
  6. City
  7. Northern

এছাড়াও আরও অনেক গুলোতে evening এ পড়া যাবে, তবে এগুলো তুলনামুলক ভাল হবে ৷ অনেকেই হয়তো বলবেন জবের পাশাপাশি অমুক ভার্সিটিতে পড়াটা খুব টাফ, অনেক প্রেশার দেয়। আপনাদের উদ্দেশ্যে বলি ভালো ভার্সিটির একটু চাপ থাকবেই। ভার্সিটি গুলোতে এভারেজ পয়েন্ট মেইনটেইন করতে হয়। ভালো ভার্সিটির চাইবেন আবার প্রেসার মুক্ত বিএসসি করবেন তা সমীচীন নয়।

ডিপ্লোমা ইন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং করার সুবিধা ও অসুবিধাগুলো কী কী?

একজন ডিপ্লোমা ইন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং ৬ষ্ঠ/৭ম সেমিস্টারে পড়ুয়া ছাত্র হিসেবে উত্তরটা দিচ্ছি। অন্যদের অনুযায়ী মতামতটা ভিন্ন ও হতে পারে।

সুবিধা:

১। এসএসসির পর ৪ বছরের মধ্যে একটা ডিগ্রি অর্জন করতে পারছেন।

২। আপনি ডিপ্লোমা কম্প্লিট করার পর নিজে কিছু একটা করতে পারবেন বা কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করার মতো একটা যোগ্যতা তৈরি হবে।

৩। আপনার দক্ষতা থাকলে ও শেখার আগ্রহ থাকলে আপনার সামনে উপার্জনের অনেকগুলো পথ খোলা আছে।

৪। আপনার ভিসিটিং কার্ডে যোগ করার মতো একটা ডিগ্রি পাবেন।

৫। স্বল্প সময়ে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সুযোগ।

৬।পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএসসি এর সুযোগ না পেলে ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকুরীর পাশা পাশি বিএসসির সুযোগ।

আরও দেখুন: ইংরেজি শেখার উপকারিতা ও উপায়সমূহ

অসুবিধা:

১। বিএসসি এর জন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশি প্রতিযোগিতার কারণে সুযোগ না ও পেতে পারেন।

২। ৪ বছরের সময়টাতে যদি কোনো একটা বিষয়ে দক্ষ না হোন তাহলে কপালে খারাপি আছে।

উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে ডিগ্রী বা অনার্স করা যায় না শুধু যে সাবজেক্টে ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেছেন ওই সাবজেক্টে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে পারবেন।ডিপ্লোমার পরে বিএসসি পড়ানো হয় শুধু একটিমাত্র সরকারি প্রতিষ্ঠানে যেখানে প্রার্থীর তুলনায় সিট অনেক কম।তাই বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে হয়।

কর্মক্ষেত্র:

ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করার পর সরকারি এবং বেসরকারি অনেক চাকরিতে ১০ম গ্রেডে উপ সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে চাকরি হয় এবং নিজের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা অর্জন হওয়ায় ব্যাবসা করা যায়,নিজেই ওয়ার্কশপ,বা অন্যান্য অনেক কিছু করা যায় যার ফলে বেকারত্ব থেকে মুক্তি মেলে।

তবে সব মিলে ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং করার পরে বেকার থাকতে হয় না।

আরও দেখুন: বাংলাদেশের সেরা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা

আশা করছি আমাদের আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লেগেছে।আমাদের যেকোনো আপডেট মিস না করতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করুন। ধন্যবাদ সবাইকে সম্পূর্ণ দেখার জন্য।

পাঠ্য.ইনফো এর ফেসবুক পেজ  ফলো করুন।

Leave a Comment