ধ্বনির উচ্চারণ – ৯ম শ্রেণির বাংলা ২য় অধ্যায় ১ম পরিচ্ছেদ

৯ম শ্রেণির বাংলা ২য় অধ্যায় ১ম পরিচ্ছেদ: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১-১৯৪১) কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বিখ্যাত কাব্যের মধ্যে আছে ‘সোনার তরী’, ‘চিত্রা’, ‘বলাকা’, ‘পুনশ্চ’ ইত্যাদি। তিনিই প্রথম বাংলা ছোটোগল্প রচনা করেন। রবীন্দ্রনাথের লেখা উপন্যাসের মধ্যে আছে ‘গোরা’, ‘ঘরে-বাইরে’, ‘যোগাযোগ’, ‘শেষের কবিতা’ ইত্যাদি। তাঁর লেখা উল্লেখযোগ্য নাটক ‘অচলায়তন’, ‘ডাকঘর’, ‘রক্তকরবী’, ‘রাজা’ ইত্যাদি।


ধ্বনির উচ্চারণ – ৯ম শ্রেণির বাংলা ২য় অধ্যায় ১ম পরিচ্ছেদ

উচ্চারণ ঠিক রেখে কবিতা

এই পরিচ্ছদে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা একটি কবিতা “দুই বিঘা জমি” শেয়ার করা হয়েছে। কবিতাটি কবির ‘কাহিনী’ কাব্য থেকে নেওয়া। কবিতাটি প্রথমে নীরবে পড়ো; এরপর সরবে পাঠ করো। সরবে পাঠ করার সময়ে ধ্বনির উচ্চারণে সতর্ক থাকতে হবে।

দুই বিঘা জমি কবিতার  শব্দের অর্থ

উড়ে: ওড়িশার লোক।
উদিল: উদয় হলো।
ক্রুর: নিষ্ঠুর; নির্দয়।
ক্ষুধাহরা: ক্ষুধা দূর করে এমন।

খত: ঋণের দলিল।
ঘটে থাকা: ভাগ্যে থাকা।
ঠাঁই: স্থান।
ঠেকানু: ঠেকালাম।

ডিক্রি: আদালতের নির্দেশপত্র।
দিঘে: দৈর্ঘ্যে।
ধাম: তীর্থস্থান।
বিজন: জনমানুষহীন।

বিবাগি: উদাসীন।
ভূরি ভূরি: প্রচুর।
ভূধর: পাহাড়।
ভূস্বামী: জমিদার।

ভ্রমি: ভ্রমণ করি।
মোহ: লোভ।
লক্ষ্মীছাড়া: দুর্ভাগা।
সপ্তম সুরে: চড়া গলায়।
হেরিলাম: দেখলাম।


স্বরধ্বনির বৈশিষ্ট্য

বাংলা স্বরবর্ণ এগারোটি। কিন্তু মৌলিক স্বরধ্বনির সংখ্যা সাতটি। যথা: ই, এ, অ্যা, আ, অ, ও, উ। স্বরধ্বনি উচ্চারণের সময়ে ফুসফুস থেকে বেরিয়ে আসা বাতাস বাক্যন্ত্রের কোথাও বাধা পায় না। কিন্তু একেকটি স্বরধ্বনি উচ্চারণের সময়ে জিভের অবস্থান ও ঠোঁটের অবস্থা একেক রকম হয়।

‘ই’ স্বরধ্বনি উচ্চারণের সময়ে—

  • জিভ উঁচু হয়; তাই এটি উচ্চ স্বরধ্বনি।
  • জিভ সামনের দিকে উঁচু হয়; তাই এটি সম্মুখ স্বরধ্বনি।
  • ঠোঁট প্রসারিত হয়; তাই এটি প্রসূত স্বরধ্বনি।
  • ঠোঁট অল্প খোলে; তাই এটি সংবৃত স্বরধ্বনি।

এ: ‘এ’ স্বরধ্বনি উচ্চারণের সময়ে

  • জিভ একটু উঁচু হয়; তাই এটি মধ্য স্বরধ্বনি।
  • জিভ সামনের দিকে উঁচু হয়; তাই এটি সম্মুখ স্বরধ্বনি।
  • ঠোঁট প্রসারিত হয়; তাই এটি প্রসৃত স্বরধ্বনি।
  • ঠোঁট অল্প খোলে; তাই এটি সংবৃত স্বরধ্বনি।

অ্যা: ‘অ্যা’ স্বরধ্বনি উচ্চারণের সময়ে

  • জিভ একটু উঁচু হয়; তাই এটি মধ্য স্বরধ্বনি।
  • জিভ সামনের দিকে উঁচু হয়; তাই এটি সম্মুখ স্বরধ্বনি।
  • ঠোঁট প্রসারিত হয়; তাই এটি প্রসৃত স্বরধ্বনি।
  • ঠোঁট বেশি খোলে; তাই এটি বিবৃত স্বরধ্বনি।

আ: ‘আ’ স্বরধ্বনি উচ্চারণের সময়ে

  • জিভ নিচু থাকে; তাই এটি নিম্ন স্বরধ্বনি।
  • জিভ মাঝখানে নিচু থাকে; তাই এটি মধ্য স্বরধ্বনি।
  • ঠোঁট গোল ও প্রসারিত হয়; তাই এটি গোলাকৃত ও প্রসৃত স্ব
  • ঠোঁট বেশি খোলে; তাই এটি বিবৃত স্বরধ্বনি।

অ: ‘অ’ স্বরধ্বনি উচ্চারণের সময়ে

  • জিভ একটু উঁচু হয়; তাই এটি মধ্য স্বরধ্বনি।
  • জিভ পিছনের দিকে উঁচু হয়; তাই এটি পশ্চাৎ স্বরধ্বনি।
  • ঠোঁট গোল হয়; তাই এটি গোলাকৃত স্বরধ্বনি।
  • ঠোঁট বেশি খোলে; তাই এটি বিবৃত স্বরধ্বনি।

ও: ‘ও’ স্বরধ্বনি উচ্চারণের সময়ে

  • জিভ একটু উঁচু হয়; তাই এটি মধ্য স্বরধ্বনি।
  • জিভ পিছনের দিকে উঁচু হয়; তাই এটি পশ্চাৎ স্বরধ্বনি।
  • ঠোঁট গোল হয়; তাই এটি গোলাকৃত স্বরধ্বনি।
  • ঠোঁট অল্প খোলে; তাই এটি সংবৃত স্বরধ্বনি।

উ: ‘উ’ স্বরধ্বনি উচ্চারণের সময়ে

  • জিভ উঁচু হয়; তাই এটি উচ্চ স্বরধ্বনি।
  • জিভ পিছনের দিকে উঁচু হয়; তাই এটি পশ্চাৎ স্বরধ্বনি।
  • ঠোঁট গোল হয়; তাই এটি গোলাকৃত স্বরধ্বনি।
  • ঠোঁট অল্প খোলে; তাই এটি সংবৃত স্বরধ্বনি।

৯ম শ্রেণির বাংলা ২য় অধ্যায় ১ম পরিচ্ছেদ

জিভের অবস্থানের ভিত্তিতে স্বরধ্বনি

‘ই’ উচ্চারণের সময়ে জিভ সামনে উঁচু হয়; তাই উপরের ছকে ‘ই’ স্বরধ্বনিকে সম্মুখ অবস্থানে দেখানো হয়েছে। এর মানে জিভের অবস্থানের ভিত্তিতে ‘ই’ সম্মুখ স্বরধ্বনি। একইভাবে ‘এ’, ‘অ্যা’—এগুলোও সম্মুখ স্বরধ্বনি। আবার ‘উ’ উচ্চারণের সময়ে জিভ পিছনে উঁচু হয়; তাই ‘উ’ স্বরধ্বনিকে পশ্চাৎ অবস্থানে দেখানো হয়েছে।

এর মানে জিভের অবস্থানের ভিত্তিতে ‘উ’ পশ্চাৎ স্বরধ্বনি। একইভাবে ‘ও’, ‘অ’—এগুলোও পশ্চাৎ স্বরধ্বনি। ‘আ’ উচ্চাণের সময়ে জিভের অবস্থান মাঝখানে থাকে; তাই ‘আ’ মধ্য স্বরধ্বনি।

যেসব স্বরধ্বনি উচ্চারণে জিভ বেশি উঁচু হয়, সেগুলো উচ্চ স্বরধ্বনি। ই, উ –এ দুটি উচ্চ স্বরধ্বনি। আবার ‘আ’ উচ্চারণে জিভ নিচু থাকে; তাই এটি নিম্ন স্বরধ্বনি। বাকি স্বরধ্বনিগুলো উচ্চারণের সময়ে জিভ একটু উঁচু হয়; তাই এ, অ্যা, অ, ও মধ্য স্বরধ্বনি।

ঠোঁটের অবস্থার ভিত্তিতে স্বরধ্বনি

যেসব স্বরধ্বনি উচ্চারণের সময়ে ঠোঁট প্রসারিত হয়, সেগুলোকে বলে প্রসৃত স্বরধ্বনি। ‘ই’, ‘এ’, ‘অ্যা’—এগুলো প্রসৃত স্বরধ্বনি। যেসব স্বরধ্বনি উচ্চারণের সময়ে ঠোঁট গোল হয়, সেগুলোকে বলে গোলাকৃত স্বরধ্বনি। ‘উ’, ‘ও’, ‘অ’—এগুলো গোলাকৃত স্বরধ্বনি।

যেসব স্বরধ্বনি উচ্চারণের সময়ে ঠোঁট কম খোলে, সেগুলোকে বলা হয় সংবৃত স্বরধ্বনি। ‘ই’, ‘এ’, ‘উ’, ‘ও’— এগুলো সংবৃত স্বরধ্বনি। আর যেসব স্বরধ্বনি উচ্চারণের সময়ে ঠোঁট বেশি খোলে, সেগুলোকে বলে বিবৃত স্বরধ্বনি। ‘অ্যা’, ‘আ’, ‘অ’—এগুলো বিবৃত স্বরধ্বনি।


আরও দেখুন: ৯ম শ্রেণির বাংলা সকল অধ্যায় এর সমাধান
আরও দেখুন: বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ করি – ৯ম শ্রেণির বাংলা ১ম অধ্যায়


আশাকরি “ধ্বনির উচ্চারণ – ৯ম শ্রেণির বাংলা ২য় অধ্যায় ১ম পরিচ্ছেদ” আর্টিকেল টি আপনাদের ভালো লেগেছে। আমাদের কোন আপডেট মিস না করতে ফলো করতে পারেন আমাদের ফেসবুক পেজ ও সাবক্রাইব করতে পারেন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল।

Leave a Comment