বিতরের নামাজের দোয়া | রমজানে বিতর নামাজ পড়ার নিয়ম

বিতরের নামাজের দোয়া | রমজানে বিতর নামাজ পড়ার নিয়ম

বিতরের নামাজের দোয়া | রমজানে বিতর নামাজ পড়ার নিয়ম

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় মুসলমান বন্ধুরা। আজকের বিষয় হলো বিতরের নামাজের দোয়া, রমজানে বিতর নামাজ পড়ার নিয়ম, বিতর নামাজে দোয়া কুনুত বাংলা, বিতর নামাজের নিয়ত। যদি এসব জানতে চান তাহলে পুরো পোস্ট আপনাকে পড়তে হবে।

অন্য ফরজ নামাজের মতো দুই রাকাত নামাজ পড়ে প্রথম বৈঠকে বসে তাশাহহুদ পড়বে। কিন্তু সালাম ফেরাবে না। তারপর তৃতীয় রাকাত পড়ার জন্য উঠে সুরা ফাতিহার সঙ্গে অন্য কোনো সুরা বা আয়াত মিলাবে। কিরাত (সুরা বা অন্য আয়াত মিলানোর পর) শেষ করার পর তাকবির বলে দুহাত কান পর্যন্ত উঠিয়ে তাকবিরে তাহরিমার মতো হাত বাঁধবে।

বিতর নামাযের গুরুত্ব

ইমামে আজম হযরত আবু হানিফা (রহঃ)-এর মতে বিতর নামায ওয়াজিব। বিতর নামায ছেড়ে দিলে গােনাহগার হবে। কোন কারণ বশতঃ বিতর নামায ছুটে গেলে এর কাযা আদায় করতে হবে। হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে ।

হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে। তিনি বলেন, মহানবী (সঃ)। ইরশাদ করেছেন, যে বিতর নামায আদায় না করে ন্দ্রিায় গেছে অথবা তা ভুলে গেছে, সে যেন তা স্মরণ হওয়া মাত্র আদায় করে নেয় অথবা যখন সে জাগ্রত হয়। (তিরমিযী, আবু দাউদ ও ইবনে মাজাহ)

বিতর নামাজ কত রাকাত ও সহিহ নিয়ম কোনটি

ইমাম আজম হযরত আবু হানিফা (রহঃ) বলেছেন, বিতর নামায তিন রাকআত। ইমাম শাফেয়ী (রহঃ) ও অন্যান্য ইমামগণের মতে তা এক রাকআত। আসলে মহানবী (সঃ) তাহাজ্জুদের নামায সর্বদা জোড় অর্থাৎ দুই রাকআত, চার রাকআত, আট রাকআত করে আদায় করেছেন। 

অতঃপর তিন রাকআত আবার কখনও এক রাকআত দ্বারা তাকে বিতর অর্থাৎ বিজোড় করেছেন। সুতরাং সাহাবীদের মধ্যে যিনি যা দেখেছেন তিনি তাই বর্ণনা করেছেন। আমাদের মাযহাবে। বিতর নামায তিন রাকআত। এক রাকআত আদায় করলে বিতর আদায় হবে না।।

আপনারা পড়তেছেন বিতরের নামাজের দোয়া ও রমজানে বিতর নামাজ পড়ার নিয়ম। আশা করি ভাল লাগবে বিতরের নামাজের দোয়া | রমজানে বিতর নামাজ পড়ার নিয়ম।

বিতর নামাযের ওয়াক্ত

ইশার নামাযের পর হতে সুবহে সাদিক পর্যন্ত বিতর নামাযের সময় । কিন্তু। বিতর নামাযের উত্তম সময় হচ্ছে, শেষ রাতে তাহাজ্জুদ নামাযের পর। কিন্তু যাদের। পক্ষে শেষ রাতে জাগ্রত হওয়ার সম্ভাবনা কম, তাদের পক্ষে ইশার নামাযের পর বিতর আদায় করা উচিত।

হযরত জাবের (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে। তিনি বলেন, মহানবী (সঃ) ইরশাদ করেছেন, যার শেষ রাতে জাগ্রত না হওয়ার আশংকা রয়েছে, সে যেন প্রথম রাতেই বিতর নামায আদায় করে নেয়। আর যার শেষ রাতে জাগ্রত হওয়ার অভ্যাস আছে সে যেন শেষ রাতেই বিতর আদায় করে। কেননা, শেষ রাতের নামাযে ফেরেশতাগণ উপস্থিত হন। আর এটাই হল উত্তম। (মুসলিম)

আপনারা পড়তেছেন বিতরের নামাজের দোয়া ও রমজানে বিতর নামাজ পড়ার নিয়ম। আশা করি ভাল লাগবে বিতরের নামাজের দোয়া | রমজানে বিতর নামাজ পড়ার নিয়ম।

আরব পড়ুন: ছাড়পত্র লেখার নিয়ম | ছাড়পত্র জন্য আবেদন লেখার নিয়ম

বিতর নামাজ জামাতে পড়ার নিয়ম

রমযান মাসে তারাবীহ নামাযের পর বিতর নামায জামাআতে আদায় করা। মুস্তাহাব। বিতর নামায জামাআতে আদায় করা হলে তৃতীয় রাকআতে সুরা ফাতিহার সাথে সূরা মিলানাের পর ইমাম সাহেবের মত মুক্তাদিগণকেও নীরবে | দোয়া কুনুত পাঠ করতে হয়। বিতর নামাযে দোয়া কুনুত পাঠ করা ওয়াজিব।

আপনারা পড়তেছেন বিতরের নামাজের দোয়া ও রমজানে বিতর নামাজ পড়ার নিয়ম। আশা করি ভাল লাগবে বিতরের নামাজের দোয়া | রমজানে বিতর নামাজ পড়ার নিয়ম।

বিতরের নামাজের নিয়ত | বিতরের নামাজের নিয়ত বাংলা উচ্চারণ | বিতর নামাজের আরবি নিয়ত

توی آن اصلى لله تعالى لك ركعات صلوة الوتر واجب الله تعالی متوجها إلى جهة الكعبة الشريفة الله

اكبر

উচ্চারণঃ নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা ছালাছা রাকআ’তি সালাতিল বিতরি ওয়াজিবুল্লাহি তা’আলা মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার। 

বাংলা নিয়ত: আমি কেবলামুখী হইয়া আল্লাহর জন্য বিতরের তিন রাকয়াত ওয়াজিব নামায আদায় করিবার নিয়ত করিলাম, আল্লাহু আকবার ।।

রমযান মাসে বিতর নামায ইমামের সাথে জামাআতের সাথে আদায় করা হলে ওয়াজিবুল্লাহি তাআলার পর বলতে হবে ইকৃতাদাইতু বিহাযাল ইমাম অর্থাৎ আমি এ ইমামের ইকৃতাদা করলাম। তারপর বাকী অংশ পাঠ করবে ।

আপনারা পড়তেছেন বিতরের নামাজের দোয়া ও রমজানে বিতর নামাজ পড়ার নিয়ম। আশা করি ভাল লাগবে বিতরের নামাজের দোয়া | রমজানে বিতর নামাজ পড়ার নিয়ম।

বিতরের নামাজ পড়ার নিয়ম | বিতর নামাজের নিয়ম | বিতর নামাজ পড়ার নিয়ম

মাগরিব নামাযের তিন রাকআত ফরয যে নিয়মে আদায় করতে হয় বিতর নামাযও সেই নিয়মেই আদায় করতে হয়। শুধু পার্থক্য হচ্ছে, নিয়ত করার সময় ওয়াক্তের জায়গায় বিতর আর ফরযের জায়গায় ওয়াজিব কথা দুটি উচ্চারণ করতে হবে ।

দু’রাকআত পড়ে প্রথম বৈঠকের পর দাড়িয়ে যাবে এবং সূরা ফাতেহা ও অপর একটি সূরা পাঠ করে “আল্লাহু আকবার” বলে কান পর্যন্ত (মহিলাদের কাধ। পর্যন্ত) হাত তুলে পূনঃ হাত বাধবে। অতঃপর দোআ কুনূত পাঠ করে রুকূ করবে, এভাবে তৃতীয় রাকআত পড়ে বসে তাশাহহুদ, দুরূদ এবং দোয়া মাসূরা পড়ার পর সালাম ফিরিয়ে নামায সমাপ্ত করবে।

আপনারা পড়তেছেন বিতরের নামাজের দোয়া ও রমজানে বিতর নামাজ পড়ার নিয়ম। আশা করি ভাল লাগবে বিতরের নামাজের দোয়া | রমজানে বিতর নামাজ পড়ার নিয়ম।

বিতর নামাজে দোয়া কুনুত বাংলা | বিতর নামাজের দোয়া কুনুত

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্না নাস্তাঈ’নুকা ওয়া নাস্তাগফিরুকা ওয়া নু’মি বিকা ওয়া নাতাওয়াক্কালু আ’লাইকা ওয়া নুসনী আ’লাইকাল খাইর। ওয়া নাশকুরুক। ওয়ালা নাকফুরুকা ওয়া নাখলাউ’ ওয়া নাতরুকু মাই ইয়াজুরুকা। আল্লাহু ইয়্যাকা না’বুদু ওয়া লাকা নুসাল্লী ওয়া নাসজুদু ওয়া ইলাইকা নাসআ’-ওয়া নাহফিরে ওয়া নারজু রাহমাতাকা ওয়া নাখশা-অ্যাবাকা, ইন্না অফালাকা বিলকুফফারি মুলহি।।

অর্থ : হে আল্লাহ! আমরা তােমার নিকট সাহায্য প্রার্থনা করছি এবং ক্ষমা ভিক্ষা করছি এবং তােমার ওপর বিশ্বাস স্থাপন করছি আর তােমারই উপর ভরসা। করছি, তােমারই উত্তম উত্তম গুণগান করছি এবং তােমারই শােকর আদায় করছি, (কখনও) তােমার নাশােকরী বা কুফরী করব না, যারা তােমার অবাধ্য হবে। তাদেরকে আমরা পরিত্যাগ করে চলব। হে আল্লাহ! আমরা একমাত্র তােমারই। দাসত্ব করছি, একমাত্র তােমার উদ্দেশেই নামায আদায় করছি, একমাত্র । তােমাকেই সেজদা করছি এবং একমাত্র তােমার নির্দেশ পালন ও তাবেদারীর জন্য। সর্বদা প্রস্তুত আছি। সর্বদা তােমার রহমতের আশা এবং আযাবের ভয় হৃদয়ে পােষণ করিছে। যদিও তােমার আসল আযাব তা কেবলমাত্র নাফরমানদের উপরই হবে। তবুও আমরা সে আযাবের ভয়ে কম্পমান থাকি।

আপনারা পড়তেছেন বিতরের নামাজের দোয়া ও রমজানে বিতর নামাজ পড়ার নিয়ম। আশা করি ভাল লাগবে বিতরের নামাজের দোয়া | রমজানে বিতর নামাজ পড়ার নিয়ম।

বিতর নামাযে দোয়া কুনুত পাঠ করতে ভুলে গেলে করণীয় | বিতর নামাজে দোয়া কুনুত না পড়লে কি নামাজ হবে

তৃতীয় রাআতে দোয়া কুনুত পড়তে ভুলে গিয়ে কখনাে রুকূতে চলে। গেলে এবং রুকূতে গিয়ে স্মরণ হলে তথন আর দোয়াকুনূত পাঠ করবে না এবং রুকূ থেকে উঠবেও না এবং রুকু করে নামায শেষে ছুহু সেজদা দিলেই চলবে। কিন্তু রুকূ থেকে ওঠে দাঁড়িয়ে দোয়া কুনূত পড়লে, তাতেও নামায হয়ে যাবে কিন্তু এরূপ করা ঠিক নয় এবং এ অবস্থাতেও ছুহু সেজদা দেয়া ওয়াজিব হবে।

ভুলক্রমে প্রথম অথবা দ্বিতীয় রাক’আতে দোয়া কুনূত পাঠ করলে তা দোয়া কুনূত হিসেবে বিবেচিত হবে না, তৃতীয় রাকআতে আবার পাঠ করতে হবে এবং ছুহু সেজদাও করতে হবে।

কেউ দোয়া কুনুত পড়তে না জানলে তা শিক্ষা করার চেষ্টা করবে এবং না শেখা পর্যন্ত নিম্নের দোয়া পাঠ করবে

ربنا اتنا في الدنيا حسنة وفي الاخرة حسنة وقنا عذاب

উচ্চারণ: রাব্বানা আতিনা ফিদদুনইয়া হাসানাতাওঁ ওয়াফিল আখিরাতি হাসানাতাওঁ ওয়াক্বিনা আযাবান্নার।

অথবা তিনবার (আল্লাহুম্মাগফিরলী) অথবা তিনবার (ইয়া রাব্বি) পাঠ করবে এবং এতেই তার নামায আদায় হয়ে যাবে। তবে দোয়া কুনূত শিক্ষা করতে হবে।

আপনারা পড়তেছেন বিতরের নামাজের দোয়া ও রমজানে বিতর নামাজ পড়ার নিয়ম। আশা করি ভাল লাগবে বিতরের নামাজের দোয়া | রমজানে বিতর নামাজ পড়ার নিয়ম।

বিতরের নামাজ কাজা হলে করনীয়

কোন কারণে বিতর নামায নির্ধারিত সময়ে আদায় করা না হলে কিংবা আদায় করে ন্দ্রিায় গেলে এবং শেষ রাতে জাগ্রত না হলে তা ফজরের পূর্বে কাযা আদায় করতে হবে। ফকীহগণের মধ্যে যারা বিতরকে সুন্নত বলেন, তারাও তার কাযা আদায় করতে বলেছেন।

হযরত যায়েদ ইবনে আসলাম (রহঃ) সাহাবীর মধ্যস্থতায় ফকীহগণের, মহানবী (সঃ) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি বেতর আদায় না করে দ্রিায় গেছে সে যেন ফজরে তা (কাযা আদায় করে নেয়। (মিশকাত)

আপনারা পড়তেছেন বিতরের নামাজের দোয়া ও রমজানে বিতর নামাজ পড়ার নিয়ম। আশা করি ভাল লাগবে বিতরের নামাজের দোয়া | রমজানে বিতর নামাজ পড়ার নিয়ম।

শেষকথাঃ বিতরের নামাজের দোয়া | রমজানে বিতর নামাজ পড়ার নিয়ম

বন্ধুরা এতক্ষন আমরা জেনে নিলাম বিতরের নামাজের দোয়া | রমজানে বিতর নামাজ পড়ার নিয়ম। তাছাড়াও এর পাশাপাশি আমরা বিতর নামাজে দোয়া কুনুত বাংলা ও বিতর নামাজে দোয়া কুনুত না পড়লে কি নামাজ হবে এবং বিতরের নামাজ কাজা হলে করনীয় এসব কিছুও জানলাম। যদি আপানদের আজকের পোস্ট টি ভালো লাগে তাহলে বন্ধুদের শেয়ার করতে পারেন।

পাঠ্য.ইনফো এর ফেসবুক পেজ  ফলো করুন।

Leave a Comment