সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার যোগ্যতা | দেশে কিংবা বিদেশে

সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার যোগ্যতা | দেশে কিংবা বিদেশে

সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার যোগ্যতা | দেশে কিংবা বিদেশে

প্রযুক্তির এই যুগে ডিজিটাল ডিভাইস ছাড়া যেন এক পা চলাও কঠিন। প্রত্যকের হাতে আজকে মোবাইল/কম্পিউটার। প্রত্যকটা ডিভাইস সফটওয়্যার ব্যতীত অচল। এই সফটওয়্যার তৈরি করে থাকে মূলত সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়াররা। সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হতে হলে অবশ্যই পড়তে হবে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং।

পাবলিক ভার্সিটিতে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার যোগ্যতা

ভার্সিটিতে আবেদন করার জন্য অবশ্যই একটি চমৎকার একাডেমিক রেজাল্ট প্রয়োজন। সাথে প্রয়োজন ভর্তি পরীক্ষায় চান্স পাওয়ার মতো যোগ্যতা। ভর্তি পরীক্ষায় চান্স পাওয়ার পরেই শুরু হয় সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে একাডেমিক লাইফ। পাবলিক ভার্সিটিতে আবেদন ও ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার জন্য যে বিষয়গুলো আবশ্যিক-

১. এসএসসি ও এইচএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগ থাকতে হবে
২. এসএসসি ও এইচএসসিতে ৪র্থ বিষয়সহ নূন্যতম জিপিএ ৩.৫ হতে হবে।
৩. এসএসসি ও এইচএসসি মিলিয়ে সর্বনিম্ন জিপিএ ৭ হতে হবে।
৪. বিভিন্ন ভার্সিটির সার্কুলারে আবেদন এর ভিন্নতা থাকে। যেমন- ঢাবি, বুয়েট, চুয়েট এগুলোতে আবেদন করার জন্য তুলনামূলক বেশী পয়েন্ট চেয়ে থাকে।
৫. সবশেষে আপনাকে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে টিকতে হবে।
৬. প্রাইভেট ভার্সিটিগুলোতে পড়ার জন্য খুব বেশী পয়েন্ট লাগে না।

সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ক ডিপার্টমেন্ট

আমাদের দেশে শুধুমাত্র সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়ানো হয় এমন বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা খুবই কম। আমাদের দেশে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং, কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং ও কম্পিউটার সাইন্স এমনকিছু সাবজেক্ট নিয়ে মিলিতভাবে একসাথে পড়ানো হয়। আমাদের দেশে কম্পিউটার সাইন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই), কম্পিউটার সাইন্স(সিএস), ইনফরমেশন টেকনোলজি(আইটি) এর মতো আরও কিছু সাবজেক্ট রয়েছে।

আমাদের দেশে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং করতে হলে এই বিষয়গুলো নিয়েই পড়তে হবে। আপনাকে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং হওয়ার জন্য যেসব যোগ্যতা লাগবে সেগুলোর উপরে ফোকাসটা রাখতে হবে। সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং এর পাশাপাশি কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার যোগ্যতা গুলো জেনে নিতে পারেন। এগুলো আপনাকে অন্যদের চেয়ে আপডেট রাখবে।

সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার জন্য সেরা ভার্সিটি

আমাদের দেশে প্রায় সকল পাবলিক ভার্সিটিতে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া যায়। তবে, নির্দিষ্ট কিছু ভার্সিটি রয়েছে যারা সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং এর উপর ফোকাস করে থাকে। ভর্তি সার্কুলারের সময় বিভিন্ন ভার্সিটিতে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার যোগ্যতা ভিন্ন ভিন্ন চাওয়া হয়ে থাকে। সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার জন্য সেরা কিছু ভার্সিটি হচ্ছে-

১. শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়(SUST)
২. বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়(BUET)
৩. মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়(AUST)
৪. রাজশাহী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়(RUET)
৫. যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়(JUST)
৬. আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়(AUST)
৭. খুলনা প্রকৌশল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়(KUET)
৮. চট্টগ্রাম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়(CUET)
৯. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়(DU)
১০. জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়(JU)

কোন সাবজেক্ট নিয়ে পড়বো

আমাদের দেশে সিএসই, সিএস, আইটি ও সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং সহ আরও কিছু সাবজেক্ট রয়েছে। আপনি যেই সাবজেক্ট নিয়েই পড়ুন না কেন, যে কোর্সই করুন না কেন প্রায় সব সাবজেক্টের ৬০%-৭০% একই। আপনি যে কোর্সই করুন না কেন আপনার এক কোর্সের সিলেবাসের সাথে অন্য কোর্সের সিলেবাস ৭০% পর্যন্ত মিল পাবেন।

সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হতে হলে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার জন্য যে যে যোগ্যতা গুলো লাগবে একাডেমিক লাইফে আপনাকে সেগুলোর প্রতি বেশী গুরুত্ব দিতে হবে।

যা যা জানা লাগবে

একাডেমিক লাইফে আপনি যেই বিষয় নিয়েই পড়ুন না কেন আপনার সম্পূর্ণ ফোকাস থাকা উচিত সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার যোগ্যতাগুলো পূরণে। আপনি যদি সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার ডিপার্টমেন্ট এর স্টুডেন্ট হয়ে থাকেন তাহলে আপনার ভার্সিটি থেকেই আপনাকে এগুলোর সবকিছু শেখানো হবে। যদি আইটি বা সিএসই এর স্টুডেন্ট হয়ে থাকেন তাহলে আপনাকে অবশ্যই এগুলোর প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে।

সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার একটি সফটওয়্যার তৈরির প্ল্যান থেকে শুরু করে ডিজাইন করা, ডেভেলপমেন্ট করা, ডেটাবেজ পার্ট তৈরি করা, সফটওয়্যার আপডেট করা, রক্ষণাবেক্ষণ করা, সফটওয়্যার এনালাইসিস করা সহ প্রায় পুরোটা করে। এগুলো ছাড়াও সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারকে আরও অনেককিছু জানতে হয়। যেমন-

মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ২০২৩

১. প্রোগামিং ল্যাঙ্গুয়েজ শেখা: যে কোন একটা টপ রেটেড প্রোগামিং ল্যাঙ্গুয়েজ (জাভা, পাইথন বা সি শার্প) শিখতে হবে। ব্যসিক লেভেল শেখা শেষ হয়ে গেলে অ্যাডভান্সড লেভেল ও সেই প্রোগামিং ল্যাঙ্গুয়েজে কি কি অ্যাডভান্সড ফিচার আছে তা শেখা।

২. ডেটাবেজ: ডেটাবেজ নিয়ে দক্ষ হতে হবে। ডেটাবেজ শেখা হয়ে গেলে প্রাকটিক্যালি প্রাকটিস করা।

৩. সফটওয়্যার ডিজাইন পার্ট ও ডেভেলপমেন্ট শেখা: সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়াররা বিভিন্ন কাজ করে থাকলেও তাদের মূল কাজ হচ্ছে সফটওয়্যার ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট করা। প্রোগামিং ও ডেটাবেজ শেখা হয়ে গেলে ডেভেলপমেন্ট শেখা।

সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার যোগ্যতা গুলো জেনে সেগুলো প্রয়োগ করলে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে চান্স পাবেন ঠিকই। তবে, চান্স পাওয়ার পরেও অনেককিছু জানতে হবে। একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার কে অবশ্যই সুদক্ষ, কৌশলী, সৃজনশীল ও সমস্যা সমাধানে পারদর্শী হতে হবে।

আইটি সেক্টরে সার্টিফিকেট এর চেয়ে দক্ষতাকে বেশী মূল্যায়ন করা হয়ে থাকে। প্রতিনিয়ত নিজেকে আপডেট রাখতে হবে। কেননা, আইটি সেক্টরে প্রতিনিয়ত নতুন কিছু না ‍কিছু আসতেই থাকে।

সাইন্স ব্যতীত অন্যান্য বিভাগের স্টুডেন্টরা

“আমি সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে চাই আমি সাইন্স নিয়ে পড়িনি তাহলে কি আমি সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে পারবো না?” এমন প্রশ্ন হরহামেশাই পাওয়া যায়। সাইন্স ব্যাকগ্রাউন্ড ব্যতীত সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে চাইলে পড়া সম্ভব। তবে, তারা সরাসরি বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে পারবে না।

তাদের ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে হলে, এসএসসি অথবা এইচএসসির পরে পলিটেকনিকে সিএসই নিয়ে পড়তে হবে। সেখান থেকে ডিপ্লোমা শেষ করার পরে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে বিএসসি শেষ করতে হবে। এক্ষেত্রে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করতে জেনারেল লাইনের চেয়ে একটু বেশী সময় লেগে যায়।

আপনি যে বিভাগেই পড়ুন না কেন আপনি কোন না কোনভাবে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে পারবেন। হয় পলিটেকনিক থেকে নাহয় সরাসরি কোন ভার্সিটি থেকে। তবে, আপনাকে অবশ্যই ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার যোগ্যতা গুলো জেনে সেই যোগ্যতা পুরন করতে হবে।

SSC 2025 Changing sentences with Answers

বিদেশে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং

অনেকেই এমন আছেন যারা দেশে না থেকে বিদেশে গিয়ে সফটওয়্যার সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে চায়। বিদেশে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার জন্য যেতে চাইলে ভালো একাডেমিক রেজাল্ট, ইংরেজি ভাষাতে দক্ষতা, সময় থাকতে পরিকল্পনা করতে হবে।বিদেশে পড়তে চাইলে এগুলোই যথেষ্ট।

তবে, যারা স্কলারশিপ বিদেশে পড়তে যেতে চান তাদের স্কলারশিপের জন্য নিরলস পরিশ্রম করে যেতে হবে। যেহেতু বাইরের দেশে সবচেয়ে বেশী ইংরেজি ভাষা ব্যবহৃত হয় তাই ইংরেজিতে ভালো হতে হবে। পাশাপাশি আইইএলটিএস (IELTS) বা টোফেল (TOEFL) কোর্স করে ভালো পয়েন্ট আনতে হবে। আইইএলটিএস বা টোফেলে কম পয়েন্ট থাকলে স্কলারশিপ পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়।

শেষ কথা

বর্তমান বিশ্বে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারদের চাহিদা প্রচুর। সেই সাথে বাংলাদেশেও দিন দিন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারদের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হতে হলে শুধু একাডেমিক পড়ার উপর নির্ভর না করে বরং প্রতিনিয়ত বাস্তব সমস্যার সম্মুখীন হওয়ার মাধ্যমেই একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং দক্ষ হতে থাকে।

দেশে কিংবা বিদেশে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার যোগ্যতা গুলো কি কি শুধু সেগুলো জানলেই হবে না। সেগুলো জেনে এখনই সেগুলো অর্জন করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। তাহলেই দেশে কিংবা বিদেশে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার জন্য চান্স পাওয়া সহজেই সম্ভব।

আশা করছি আমাদের আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লেগেছে।আমাদের যেকোনো আপডেট মিস না করতে আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করুন। ধন্যবাদ সবাইকে সম্পূর্ণ দেখার জন্য।


পাঠ্য.ইনফো কে ফেসবুক পেজ ফলো করুন।

Leave a Comment